ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ |
৩৭ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

ভোটে রাজনৈতিক দলের ফেসবুক প্রচারে কড়াকড়ি আনছে মেটা

প্রচার যেন অপপ্রচার না হয়ে যায়!

প্রচার যেন অপপ্রচার না হয়ে যায়!
ভোটে রাজনৈতিক দলের ফেসবুক প্রচারে কড়াকড়ি আনছে মেটা

সামনেই ভোট, রাজনৈতিক দলের ফেসবুক প্রচারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই–সংবলিত বিজ্ঞাপনী পণ্য -কে বাগে আনতে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে প্রচার যেন অপপ্রচার না হয়ে যায়!

২০২৪ সালটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে অনেক দেশের জন্যই। তার কারণ এই বছরে বিশ্বের বেশ কিছু বড় দেশের নির্বাচন। সেই তালিকায় যেমন বাংলাদেশ ভারত আছে, তেমনই আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকোর মতো দেশও রয়েছে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এখন অন্যতম বড় অস্ত্র। কিন্তু নির্বাচনকে মাথায় রেখে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মালিক সংস্থা মেটা তাদের পলিসিতে জরুরি কিছু পরিবর্তন করেছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে নির্বাচনের সময় অনেক ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বারবার সতর্কবাণী দিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগমনের কারণে সেই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। আগের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞাপনে প্রচারিত তথ্যের সত্যতা নির্ধারণে ফেসবুক সচেষ্ট হলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ফেসবুকের সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুন ছিল না।

একটি ব্লগ পোস্টে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ বলছেন, “অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন যেহেতু আসছে, আমরা ঠিক করেছি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নীতি এবং সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলি আপডেট করা হবে এবং ২০২৪ সালে তা প্রযোজ্য হবে।” তিনি আরও বলছেন, “নাইজিরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক এবং আর্জেন্টিনায় সাম্প্রতিকতম বড় নির্বাচন এবং সামনের বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য ও আঞ্চলিক নির্বাচনগুলি চলাকালীন আমাদের প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার বন্ধ করতে চাইছি।”

মেটা যে জায়গাটায় সবথেকে বেশি ভয় পাচ্ছে, তা হল রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার। সেই কারণে ২০২৪ সালের প্রথম থেকেই বিজ্ঞাপনদাতাদের জানাতে হবে যে, তারা কোনও রাজনৈতিক (পলিটিক্যাল) বা সামাজিক (সোশ্যাল) বিষয় নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করার সময় এআই বা অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে কি না। এটি তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন বিজ্ঞাপনটিতে একটি ফটোরিয়ালিস্টিক ইমেজ বা ভিডিও বা বাস্তবসম্মত সাউন্ডিং অডিও থাকে। বিজ্ঞাপনদাতাকে পরিষ্কার করে দিতে হবে, সেই ছবি,ভিডিও বা অডিও সত্যিকারের। এআই -এর কারসাজিতে কনটেন্টে কোনও কারিকুরি করা হয়নি, তা-ও প্রমাণ করতে হবে বিজ্ঞাপনদাতাকে।

মেটা জানিয়েছে, গৃহায়ণ, কর্মসংস্থান, ঋণ, সামাজিক বিষয়াদি, নির্বাচন, রাজনীতি, স্বাস্থ্য ও আর্থিক সেবা খাতের বিজ্ঞাপনদাতারা অ্যাডস ম্যানেজার থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত বিজ্ঞাপন তৈরির সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবে না।

শুধু তাই-ই নয়। এটি তখনও প্রযোজ্য হবে, যখন কোনও বিজ্ঞাপনে একটি বাস্তববাদী-সুদর্শন ব্যক্তিকে দেখানো হবে, বাস্তবে যাঁর কোনও অস্তিত্ব নেই। এমন কোনও ঘটনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি কার্যকর হবে, যা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে, অথচ তার অস্তিত্ব নেই। ব্লগ পোস্টে ক্লেগ বলছেন, বাস্তব কোনও ঘটনার ফুটেজ বদলে দিলে চলবে না, যা সাধারণত এআই -এর সাহায্যে করা হয়। সেই কারণেই বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তুর কোনও অংশ তৈরি করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা সব রাজনৈতিক দলকে বিজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এআই–বিষয়ক সুরক্ষা সম্মেলনের আগে নিক ক্লেগ সরকার ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করেছিলেন যে ২০২৪ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার জন্য প্রযুক্তি যে ব্যবহার করা হবে, সে বিষয়ে তাদের প্রস্তুত থাকা উচিত। বিশেষ করে নির্বাচনসম্পর্কিত সেসব বিষয়বস্তুতে তিনি জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা এক প্ল্যাটফর্ম থেকে আরেক প্ল্যাটফর্মে ঘুরে বেড়ায়।

মেটা অবশ্য সব ধরনের কনটেন্টে এআই–সৃষ্ট ভিডিও ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যদিও প্যারোডি ও ব্যঙ্গ রসাত্মক কনটেন্টের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

ভোট,রাজনৈতিক দল,ফেসবুক প্রচার,কড়াকড়ি,মেটা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend